বন্যার্তদের পুনর্বাসনে সহায়তা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সংগ্রহ করা ত্রাণ থেকে আট কোটি টাকা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজমের কাছে ৮ কোটি টাকার চেক তুলে দেন সমন্বয়করা।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা সংগৃহীত ত্রাণের অর্থ প্রদান করার জন্য এসেছেন। তাদের সংগৃহিত ত্রাণ নয়, এটা বাংলাদেশের প্রাণ। এখানে শিশু, কর্মজীবী মানুষ, গৃহবধূ- দেশের আপামর জনগণ তাদের সাধ্যমতো এ তহবিলে দান করেছেন। তাদের সেই সংগৃহীত অর্থ আজকে দিতে এসেছেন।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা দেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, গত ২৭ আগস্ট থেকে আজকে পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলের জন্য বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ৮৩ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার ৮ টাকা ৫৩ পয়সা গ্রহণ করেছি। মোট ২০৩টি চেক আমরা গ্রহণ করেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান বলেন, ‘টিএসসিতে যে ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম হয়েছে, সেখানে আমি একজন প্রতিনিধি ছিলাম, আমার সঙ্গে আরও প্রতিনিধিরা রয়েছেন এখানে। টিএসসিতে আমাদের যে ত্রাণ কার্যক্রম হয়েছে গতকাল সেটার পূর্ণাঙ্গ অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছি আমরা। সব আয়-ব্যয়ের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এখন ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা আছে। সেখান থেকে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ৮ কোটি টাকা আমরা উপদেষ্টার কাছে আমরা হস্তান্তর করব।’
কেন তারা এ টাকা দিচ্ছেন সেই বিষয়ে সমন্বয়ক বলেন, ইতোমধ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে একটি জাতীয় বন্যা পুনর্বাসন কমিটি করা হয়েছে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটিও করা হয়েছে। সেখানেও আমাদের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। আমরা চাই আমাদের এই টাকাটা সাধারণ মানুষের পুনর্বাসনে কাজে লাগুক।
‘আমরা ওয়াচ ডগ হিসাবে তদারকি করব। সেই চিন্তা-ভাবনা থেকে আমরা ৮ কোটি টাকা হস্তান্তর করছি’ বলেন লুৎফুর রহমান।
বাকি ১ কোটি ৯১ টা লাখ টাকা রয়েছে সেটা উত্তরবঙ্গে বন্যার্তদের জন্য ব্যয় করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গত পরশু সেখানে আমাদের পাঁচটি টিম গিয়েছে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য।
এ সমন্বয়ক আরও বলেন, গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টিএসসিতে ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে নগদ অর্থ এসেছে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা। এরই মধ্যে আমরা ব্যয় করেছি এক কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। এই টাকা দিয়ে আমরা ত্রাণ কিনেছি, গাড়ি ভাড়া দিয়েছি। এক্ষেত্রে ২০০ ট্রাক ব্যবহার করা হয়েছে। প্রায় ২ লাখ ত্রাণের প্যাকেট আমাদের গিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কম্বলসহ অনুদান দিয়েছে বিটিএমএ
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২ লাখ ৫০ হাজার কম্বল দিলো ইসলামী ব্যাংক